শিশুদের হাম হলে কি করনীয়

 শিশুদের হাম হলে কি করনীয়। পাঁচ বছরের নিচের বাচ্চাদের সাধারণত হাম হয় । তবে বর্তমান সময়ে পাঁচ থেকে দশ বছরের , এমনকি টিনেজারদের আবার তার চেয়েও বেশি বয়সের ছেলেমেয়েদের এই হাম রোগ দেখা যাচ্ছে । কিন্তু আশার কথা যে , বর্তমান সময়ে এক দুর্দান্ত প্রতিষেধক  বেরিয়েছে।

শিশুদের-হাম-হলে-কি-করনীয়

হাম বা মিজেলস এটি সাধারণত ভাইরাসজনিত রোগ । এটা প্যারামেক্সি গোত্রের ভাইরাস । এই হাম রোগটা খুবই সংক্রামক । হামে আক্রান্ত শিশুটি র হাঁচি কাশি , থুতু বা লালা এবং ড্রপ প্লেটের মাধ্যমে বাতাসের মধ্য দিয়ে সংক্রমিত হয় । তখন আক্রান্ত শিশুটিকে একটু ঘরের ভেতরে রাখার চেষ্টা করতে হবে।

পেজ সূচিপত্রঃ শিশুদের হাম হলে কি করনীয়

শিশুদের হাম হলে কি করনীয়

শিশুদের জন্য হাম এটি কখনো কখনো মারাত্মক রোগ ধারণ করতে পারে । কারণ এটি নিউমোনিয়া , এনসেফ্যালাইটিস সহ অন্যান্য জটিলতা শিশুর সৃষ্টি করতে পারে । তাই হাম প্রতিরোধের জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল সঠিক সময়ে টিকা নেওয়া । বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য সংস্থাগুলি শিশুদের হাম প্রতিরোধে টিকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন । ফলে এই রোগের প্রাদুর্ভাব কমাতে বেশ সহায়ক হয়েছে।শিশুদের হাম হলে কি করনীয় তা নিম্নে আলোচনা করা হলো।

  • হামে আক্রান্ত শিশুটিকে ঘরে রাখবো।
  •  বাইরে অন্য শিশুদের সাথে মিশতে না দেব ।
  • হামে আক্রান্ত শিশুটিকে প্রচুর পরিমাণ পানি খেতে দিতে হবে
  • সেই সময় শিশুটিকে রেস্ট নিতে দিতে হবে।
  • বাকি সব উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।
  • স্বাভাবিক খাবার দেওয়া। অল্প অল্প করে বারবার দেওয়া ।

যেহেতু এই ভাইরাস জাতীয় রোগটির তেমন কোন নির্দিষ্ট ঔষধ নেই । মূলত উপসর্গ দেখে চিকিৎসা নেওয়া আর বাড়িতে শিশুটিকে যত্নে রাখা ।

শিশুদের হাম কেন হয়

এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। প্রধানত ভাইরাসটি স্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে এবং দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে। শিশুদের হাম কেন হয় তার কারণ হলো এটি একটা মিজেলস ভাইরাসজনিত সংক্রমণ রোগ। এটি মূলত হাঁচি কাশি এবং শ্বাসের মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে । টিকা হল হামের জন্য সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা । তাই প্রতিটি শিশুকে টিকা গ্রহণ করা উচিত । নতুবা শরীরের ভাইরাসটির বিরুদ্ধে কোন প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হতে পারে না ।

আরো পড়ুনঃ নবজাতক শিশুর সর্দি কাশি হলে করণীয়

যেসব শিশু অপুষ্ট জনিত কারণে ভোগে বা যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। সেই ধরনের শিশুদের হাম রোগের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। জনাকীর্ণ পরিবেশে শিশুদের হাম হয়ে যাওয়ার বা হাম ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যেমনঃ হতে পারে স্কুল বা ডে কেয়ার সেন্টার । যেসব দেশে হাম ভ্যাকসিনের হার কম থাকে এবং যেখানে হাম ছড়িয়ে থাকে সেসব জায়গায় ভ্রমণ করলে শিশুদের হাম হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

শিশুদের হামের লক্ষণ

বাচ্চার হাম হবার ১৫ দিন আগে থেকে লক্ষণ স্বরূপ বাচ্চার  শরীরটা খারাপ লাগতে শুরু করে । একটু ক্লান্ত বোধ করছে । একটু সর্দি সর্দি ভাব , এইভাবে প্রডোমাল সিস্টেম সেটা শুরু হয় । তারপরে দেখা যায় একদিন খুব জ্বর আসে । সেটাকে বলা হয় ডেইজি রওফেলনেইস । রোগীর প্রথম প্রকাশের দিন জ্বর আসলে স্বাভাবিকভাবে যেমন লাগে তা তো হবে । কিন্তু লক্ষ্য রাখতে হবে সে সময় বাচ্চার প্রচুর নাক দিয়ে পানি বের হবে ভীষণ কাশি হবে এবং চোখটা খুব লাল হয়ে যায় ।

এগুলো সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকে হামের লক্ষণ । এইভাবে হাম শুরু হতে পারে এবং যেদিন জ্বর শুরু হয় তার চার দিনের মাথায় শরীরে দেখা যায় র‍্যাশ । লাল লাল , গুড়ি গুড়ি সারা গায়ে দেখা যায় । তবে প্রথমে শুরু হয় কানের পেছনে । কেউ যদি মুখটা খুলে দেখে বাচ্চার মাউথ ওরাল কেভিডির মধ্যে খানে , দাঁতের পাশে কলপ্লেট স্পট বলে ছোট সাদা ফুসফুড়ির মত দানা দানা ও দেখা যায় । একেবারে প্রথমের এই উপসর্গ এই হামের জন্য ।

শিশুদের হাম জটিলতা

 শিশুদের হাম হলে কি করনীয় তা জেনে নেওয়া অভিভাবক হিসেবে অত্যন্ত প্রয়োজন । হাম সেরে যাওয়ার পর নিউমোনিয়া হওয়ার প্রবণতা শিশুদের বেড়ে যায় । বুকে কফ জমা বা কানে ইনফেকশন হতে পারে । আবার অনেক সময় দেখা যায় শিশুটি হাম সেরে যাবার পরেও দুই তিন মাস অন্যান্য ভাইরাসজনিত রোগে ভুগতে পারে । যেমনঃ রোগটি মারাত্ম ক আকারের রূপ ধারণ করতে পারে । এনসেফ্যালাইটিস এর মত জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে । আর তাই হাম প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকরী পন্থা হলো সঠিক সময়ে শিশুকে টিকা দিয়ে নেওয়া।

আরো পড়ুনঃ  শিশুর টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার

অর্থাৎ সাময়িকভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। হামের জন্য বিশেষ কোনো ভাইরাস নিরোধক করার ঔষধ নেই। যেহেতু ভাইরাসজনিত কারণে হাম হয়ে থাকে তাই ব্যাকটেরিয়া নিরোধক অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ দিয়ে এটি নিরাময় করা যায় না। তবে ভয় পাওয়ার মতো কোনো কারণ নেই। শিশুকে সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন দিয়ে নিতে পারলে শিশু অনেকটা নিরাপদ। তবে একথাও সঠিক যে একবার হাম থেকে সেরে উঠলে সারা জীবনব্যাপী হামের বিরুদ্ধে  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শিশুটি অর্জন করতে সক্ষম হয় ।

কোন কারণে হাম হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়

 শিশুদের হাম হলে কি করনীয় , তা এক সচেতন বাবা-মা হিসেবে জেনে নেওয়া অতি প্রয়োজন । শিশুকে নিয়মমতো হাম প্রতিষেধক টিকা না দেওয়া থাকলে এই রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যেতে পারে । তাই টিকা দেওয়ার ব্যাপারে অভিভাবকের সচেতনতা অবশ্যই জরুরী । যেসব শিশুর শরীরে ভিটামিন এ এর অভাব দেখা দেয় । সে সব শিশুর হামে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় । শরীরে ভিটামিন এ এর ঘাটতি দেখা দিলে হামের জটিলতা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে । তাই আপনার সন্তানকে ভিটামিন এ যুক্ত খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস অবশ্যই রাখুন ।

শিশুদের-হাম-হলে-কি-করনীয়

শুধু তাই নয় যেসব শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, তাদের হাম রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি থাকে। পরবর্তী সময়ে আবার জটিলতাও বেশি দেখা দেয় । আপনার যদি ট্রাভেলিং করার অভ্যাস বেশি থাকে। আর সে দেশে যদি হামের প্রাদুর্ভাব বেশি থাকে । তাহলে  আপনার শিশু টির হামের জীবাণুর মাধ্যমে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকতে পারে ।

  •  পাঁচ বছরের কম বয়সী টিকাহীন শিশু ,
  •  ৩০ বছরের বেশি বয়সের টিকা হীন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি।
  •  টিকা না দেওয়া গর্ভবতী নারী,
  •  দুর্বল ব্যক্তি , অপুষ্টিজনিত ভোগা ব্যক্তি ও 
  • যারা ভিটামিন এ  এর অভাবে আছেন । 

 এরা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ । শুধু তাই নয় আপনার শিশুকে নিরাপদে রাখার দায়িত্ব আপনার। তাই স্কুলে বা ডে কেয়ারে কারো যদি হাম হয় সেই জায়গা থেকে আপনার সন্তানকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন।

শিশুদের হামের ঘরোয়া চিকিৎসা

নিয়মিত শিশুকে হামের টিকা দেওয়া এবং এর মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে প্রতিরোধ যোগ্য সম্ভব। প্রায় ৯৭% কার্যকরী হয়ে থাকে । তাই শিশুর হাম হলে আপনি বিশেষজ্ঞর পরামর্শ অনুযায়ী চলার পরেও নিজে ঘরোয়া ভাবে চিকিৎসা করলে আরো বেশি তাড়াতাড়ি শিশুটি আরোগ্য হতে পারে । অনেক শিশুর হামজনিত কারণে চোখে প্রদাহ দেখা দেয় এবং আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা দেখা দিতে পারে তাই সেই সময় আপনি আপনার শিশুকে অন্ধকার বা কম আলো যুক্ত জায়গায় রাখার চেষ্টা করুন । তরল জাতীয় খাবার। মাড়ি ভাত আপনার শিশুকে খাওয়াতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ শরীরে লাল লাল রেশ চুলকানি - কার্যকরি ঘরোয়া প্রতিকার

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সংস্থাগুলি হামের সময় রোগীকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন । সেই ক্ষেত্রে আপনি হাম হলে শিশুর জন্য দুটি ডোজ নিতে পারেন এক ডোজ প্রথমে হামে লক্ষণ দেখা দিলে এবং দ্বিতীয় ডোজ তার ২৪ ঘন্টা পরে । হাম এ আক্রান্ত শিশুরা অন্যান্য সংক্রমনের ঝুঁকি বেশি থাকে তাই তাদের সুরক্ষার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অভিভাবক হিসেবে আপনার অত্যন্ত প্রয়োজন । পরিষ্কার নিমের পাতা পরিষ্কার বিছানার নিচে রেখে  বিছানায় শিশুটিকে রাখলে তাড়াতাড়ি হাম এর ফুসফুড়ি গুলো শুকোতে সহায়তা করে।

শিশুদের হামের চিকিৎসা

যেহেতু হাম একটি ভাইরাসজনিত রোগ, তাই এর কোন নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ না থাকার ফলে সরাসরি ভাইরাসটি ধ্বংস হয় না । তবে আপনার সঠিক যত্ন এবং প্রয়োজনীয় মতে চিকিৎসার মাধ্যমে শিশুটির আরোগ্য সম্ভব । আর তাই আপনার শিশুর হামের জন্য চিকিৎসা সম্পর্কে যে পদক্ষেপ গুলো আপনি নিতে পারেন। তা নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ

  • আরাম ও পর্যাপ্ত বিশ্রামঃ যখন একজন শিশু আমি আক্রান্ত হয় তাকে প্রচুর পরিমাণ বিশ্রাম দেওয়া আমাদের প্রয়োজন । বিশ্রাম হামে আক্রান্ত শিশুর শরীরকে সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে থাকে ।
  • পর্যাপ্ত পানিগ্রহণঃ জ্বর এবং সংক্রমণজনিত কারণে শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই শিশুকে ওই সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি , ফলের রস এবং তরল জাতীয় খাবার খাওয়ানো অত্যন্ত প্রয়োজন । তরল জাতীয় খাবারের মাধ্যমে শিশুর শরীরে পানির অভাব পূরণে সহায়ক হয় এবং শারীরিক অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে থাকে ।
  • জ্বর কমানোর ঔষধঃ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুর জ্বর কমানোর জন্য প্যারাসিটামল বা আইবো প্রফেন জাতীয় ঔষধ দিতে পারেন । তবে এক্সপিরিন জাতীয় ঔষধ শিশুদের দেওয়া উচিত নয় এতে করে শিশুদের রাইসিনড্রোম নামে বিরল কিন্তু গুরুতর অবস্থায় ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • পুষ্টিকর খাবারঃ শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হামে আক্রান্ত শিশুটিকে তার খাওয়ার ইচ্ছা শক্তি কমে গেলেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা নিতে পারেন।

হাম হলে শিশুকে যা খাওয়াবেন

 শিশুদের হাম হলে কি করনীয় একজন সচেতন অভিভাবক হিসেবে আপনার জানা তা  উচিত। হাঁ বলে শিশুর শরীর ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে । কমে যায় শিশুর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা । আপনার শিশু যখন হাম হবে তখন আপনাকে খাওয়ানো দরকার পুষ্টিকর খাবার। যা হালকা ও সহজপাত্র হয়ে থাকবে । যেসব শিশু সন্তান মায়ের দুধ খেয়ে থাকে তারা পাশাপাশি শক্ত খাবার হিসেবে ভাত ডাল সবজি মাছ ডিম এ ধরনের খাবার খেতে পারে ।

শিশুকে সেই সময় নরম ভাত, ডাল , সবজি , স্যুপ , ফলের রস , পাকা কলা এই খাবারগুলো  ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেতে দিতে হবে । হাম হওয়ার ফলে শিশুকে খাবারের প্রতি অনিয়া আসতে পারে । সেই ক্ষেত্রে শিশুকে অল্প অল্প করে বারবার খেতে দিতে হবে । একই খাবার না দিয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খাবারগুলোকে দিতে চেষ্টা করতে হবে । পানিটা পারলে পারে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে খাওয়ানো ভালো । একেবারে খাঁটি ছানা দিয়ে সন্দেশ দেওয়া যেতে পারে। এতে করে আপনার শিশু অপুষ্টি থেকে দূরে থাকবে এবং দুর্বলতা তাকে গ্রাস করতে পারবে না ।

হাম এর প্রতিষেধক

বর্তমান সময়ে হামের প্রতিষেধক আবিষ্কারের ফলে হাম এ আক্রান্ত খুব কম শিশুরই হয়ে থাকে । আমাদের দেশে দেখা যায় এখন শতকরাতেও নয় , একেবারে লক্ষ্তে তিন থেকে চারজন শিশুর হাম হয়ে থাকে । আর মৃত্যুর হার তো একেবারেই নেই বললেই চলে । অল থ্যাংকস টু ভ্যাকসিন । এই ভ্যাকসিন প্রতিষেধক টি সরকার থেকে দেওয়া হয়ে থাকে । সাধারণত শিশুর বয়স ৯ মাস পূর্ণ হলে একবার হামের প্রতিষেধক টিকাটি দেওয়া হয় এরপর ১৫ মাস বয়সে দ্বিতীয় ডোজ অর্থাৎ বুস্টার ডোজ দেওয়া হয় ।

শিশুদের-হাম-হলে-কি-করনীয়

শিশুর জন্য পরপর এই দুটি ডোজ নেয়া হলে হামের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় । সরকারি হাসপাতাল ও ইপিআই কেন্দ্রে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হয়ে থাকে । সময়মতো টিকা দিতে না পারলে হাম মারাত্মক জটিলতা (নিউমোনিয়া , ডায়রিয়া , এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত) ঘটাতে পারে । তাই টিকার  কার্ডটি সযত্নে রেখে দিয়ে সময় মত টিকা দেওয়া খুব জরুরী । আপনার শিশুটি সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেড়ে উঠুক এই প্রত্যাশা আমাদের সকলের ।

উপসংহারঃ শিশুদের হাম হলে কি করনীয়

সাধারণভাবে দেখা গিয়েছে যে একজন হামে আক্রান্ত ব্যক্তি ১২ থেকে ১৮ জন ঝুঁকি প্রবণ ব্যক্তির দেহের ভিতরে রোগটি সংক্রমিত করতে পারে । হামের জীবাণু সংক্রমনের জন্য লক্ষণ হিসাবে প্রকাশ পেতে প্রায় ১০ থেকে ১৪ দিন সময় লেগে থাকে । হাম হওয়ার পরে যখন শুকোতে থাকবে তখন সংক্রমনের আশঙ্কা বেশি থাকে কারণ শুকনো ওই খোলসটার ভিতরেই জীবাণু বাস করে। আর তাই আক্রান্ত ব্যক্তি হামের জীবাণু নিজের অজান্তে চারিদিকে ছড়াতে থাকে।

পিটার্ম বা সময়ের আগে জন্ম যাদের , আবার যেসব বাচ্চা ভীষণ রোগা , যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। সেই ক্ষেত্রে অপেক্ষা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরী। একজন সচেতন অভিভাবক হিসেবে সেই সময় আমরা আমাদের সন্তানদেরকে আক্রান্ত হাম এর রোগীর কাছ থেকে দূরে রাখব এবং রোগীকে একটা নিরাপদ ঘরে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন আলো বাতাস সম্পূর্ণ ঘরে রাখার চেষ্টা করব । সব সময় পুষ্টিকর খাবার এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি তরল জাতীয় খাবার তাকে খেতে দিতে হবে । 

অধিকাংশ হাম জনিত মৃত্যুই হয়ে থাকে অনূর্ধ্ব ৫ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে ঘটে থাকে। অনেকে ভ্রমণের কারণে ও টিকা নিতে অনীহা দেখানোর কারনে হামের বিরুদ্ধে অসাবধানতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে আমের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তির সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে আছে । রোগটি ছোঁয়াচে হওয়ার জন্য সাধারণত তার থালা বাসন এবং ব্যবহৃত জিনিসপত্র গুলো একেবারে নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা রাখতে হবে। এতে করে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য সকলেই নিরাপদ ও সুস্থ থাকা সম্ভব হবে বলে আমি আশা রাখি ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনার মূল্যবান মতামত দেন। এখানে প্রতিটি মতামতের রিভিউ প্রদান করা হয়।

comment url