মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে এর কার্যকারী তথ্য
মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে তা আপনাকে মালয়েশিয়া যেতে হলে অবশ্যই জানতে হবে। বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে অনেকে মালয়েশিয়াতে কাজের উদ্দেশ্যে যেয়ে থাকেন। বর্তমানে শ্রমবাজার চালু আছে। তাই বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ লোক মালয়েশিয়া কাজের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমাচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকারের সাথে মালয়েশিয়া সরকারের একটি চুক্তি রয়েছে। ফলে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক মালয়েশিয়া যেতে পারবে। একটি নির্দিষ্ট ফি দিয়ে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া কাজের ভিসা শ্রমিক নিচ্ছে। তাই আপনাকে জানতে হবে সরকার নির্ধারিত কত টাকা দিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়া যায়।
পেজ সূচিপত্রঃ মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
- মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
- মালয়েশিয়া কাজের বেতন কত
- মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসা কত টাকা
- মালয়েশিয়া কেমন দেশ
- মালয়েশিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি
- মালয়েশিয়া সর্বনিম্ন বেতন কত
- মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত
- মালয়েশিয়া ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
- বাংলাদেশিরা কেন কাজের জন্য মালয়েশিয়া যান
- শেষ কথাঃ মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
বাংলাদেশ থেকে যদি কোন কর্মী কাজের উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া যেতে চায় তাহলে তার
সরকারি নির্ধারিত ফি হলো ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা। কিন্তু বর্তমানে ভিসার প্রচুর
চাহিদার কারণে ৫ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হচ্ছে। মালয়েশিয়া সরকার
বাংলাদেশ থেকে সবচাইতে বেশি প্রবাসী নিচ্ছে পামবাগানে কাজ করানোর জন্য। বর্তমানে
পামবাগানে কাজের জন্য যেতে চান তাহলে বাংলাদেশ থেকে সেই শ্রমিকের ৫ লক্ষ থেকে
৫লক্ষ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হবে।
ফ্যাক্টরি ভিসাতে একটু বেশি টাকা লাগে তাই বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ৫লক্ষ থেকে ৫লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে। আপনারা এজেন্সির সাথে আলোচনা করে যত কম টাকায় যেতে পারেন তত ভালো। অর্থাৎ মালয়েশিয়া যেতে কাজের ভিসা খরচ পড়ে ৫ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। তবে ভিসাটি এজেন্সি ছাড়া নিজে নিজে করতে পারলে ভিসা খরচ কিছুটা কম হতে পারে। মালয়েশিয়া কৃষি ভিসার দাম হচ্ছে ৫ লক্ষ টাকা এবং বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে ৬ লক্ষ টাকা ভিসার দাম।
মালয়েশিয়া কাজের বেতন কত
বাংলাদেশের অধিকাংশ লোক কাজ না জেনে বিদেশে পাড়ি জমায়। মালয়েশিয়া যে কাজগুলো
দক্ষতার প্রয়োজন হয় না এই কাজগুলোর বেতন , ডিউটি ও সুবিধাগুলো চলুন আগে জেনে
নিই। ফ্যাক্টরি বা কারখানা ওয়ার্কার সাধারণত ১০ থেকে ১১ ঘন্টা ডিউটি হয়ে থাকে।
এরপর যা করবেন তা ওভারটাইম হিসেবে ধরা হয়। কারখানা ওয়ার্কারের বেতন
১৮০০ রিঙ্গিত থেকে ২২০০ রিংগিত পর্যন্ত। ওভারটাইম সহ ২৫০০ থেকে ৩০০০ রিঙ্গিত
পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই সেক্টরে যে সুবিধাগুলো পাওয়া যায় তা হল বছরে বছরে ভিসা
লাগানো দুই থেকে চার দিন ছুটি এবং বেতন নির্দিষ্ট সময়ে পাওয়া যায়।
সুপার মার্কেটের কাজের বেতন অন্যান্য কাজের বেতনের চেয়ে কম হয়। সুপার মার্কেটের বেতন ১৭০০ থেকে ২২০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত হয়ে থাকে। এখানে ওভার টাইমের ডিউটি কম । তাই বেতনও কম। মাসে দুই থেকে চার দিন ছুটি থাকে। কোন অভিজ্ঞতা ছাড়া এসব কাজে জয়েন করা যায়। মালয়েশিয়ায় রেস্টুরেন্ট বা হোটেল স্টাফ হিসেবে কাজ করা একটি জনপ্রিয় পেশা । বিশেষ করে নতুনদের জন্য । এই সেক্টরে বেতন সাধারণত ১৭০০ থেকে ২২০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত হয়ে থাকে । অনেক রেস্টুরেন্ট থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা দিয়ে থাকে ।
মালয়েশিয়ায় ক্লিনার সেক্টরে কাজ বিভিন্ন পদে বিভক্ত । এয়ারপোর্ট , হসপিটাল , মার্কেট , কোম্পানি একেক জায়গায় একেক রকম সুবিধা পাওয়া যায় । বেসিক বেতন শুরু হয় প্রায় ১৭০০ থেকে ২২০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত । ডিউটি ৮ ঘন্টা , তবে ওভারটাইম করলে অতিরিক্ত আয় হয় । মাসে চার দিন ছুটি পাওয়া যায়। অনেক কোম্পানি থাকার ব্যবস্থা দেয়। মালয়েশিয়ায় কনস্ট্রাকশন বা নির্মাণ শ্রমিকের চাহিদা বেশি হয়ে থাকে। কারণ দেশটিতে প্রতিনিয়ত নতুন বিল্ডিং , ব্রিজ , রাস্তা, এসব তৈরি হচ্ছে।এসব কাজের বেসিক বেতন শুরু হয় ১৮০০ থেকে ২৫০০ রিংগিত পর্যন্ত।
এই কাজে প্রতিদিন ওভারটাইম থাকে। যা মাসে দাঁড়ায় ২৫০০ থেকে ৪ হাজার রিঙ্গিত পর্যন্ত । আপনি যত দক্ষ হবেন তত আপনার এই কাজে বেতন বাড়বে। ওয়েল্ডার পদ চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে মালয়েশিয়ায় । বিশেষ করে নির্মাণ , ফ্যাক্টরি , ওয়ার্কশপ , দক্ষ ওয়েল্ডারের চাহিদা বেড়েই চলেছে । এই কাজের বেসিক বেতন সাধারণত ২২০০ থেকে ৩০০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত । ওভারটাইম করলে ৩৫০০ থেকে ৪ হাজার রিঙ্গিত পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। টেলার দুই হাজার থেকে ৩৫০০ রিঙ্গিত । আর উৎসব এর সময় ৪০০০ পর্যন্ত এদের আই হয়ে থাকে।
মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসা কত টাকা
মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসায় যেতে কত টাকা লাগে তার পাশাপাশি মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে তা অবশ্যই আপনার জানা প্রয়োজন। কারণ আপনি যদি মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ভিসা তৈরি করেন তাহলে মালয়েশিয়া সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে। বাংলাদেশ থেকে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে প্রচুর পরিমাণ টুরিস্ট মালয়েশিয়া ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যান। এজন্য মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশের জন্য খুব অল্প টাকায় টুরিস্ট ভিসা চালু করেছে ।
আরো পড়ুনঃ বেলারুশ কাজের ভিসা বেতন কত - সর্ব নিম্ন বেতন কত
মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ থেকে টুরিস্ট ভিসায় আবেদন করতে ৫৮০০
টাকা লাগে । সাথে আপনার বিমানে যাওয়া আসা টিকিট কেনা থাকলে আপনি খুব সহজে
মালয়েশিয়াতে তিনমাস টুরিস্ট ভিসাতে থাকতে পারবেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন টুরিস্ট
কোম্পানি মালয়েশিয়ার জন্য বিভিন্ন প্যাকেজ দিয়ে থাকে । সর্বনিম্ন ৫০০০০ টাকা
থেকে শুরু করে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত টুরিস্ট কোম্পানিগুলো প্যাকেজ দিয়ে থাকে ।
যদি অল্প খরচে মালয়েশিয়া টুরিস্ট এর জন্য যেতে চান তাহলে অবশ্যই সবকিছু অনলাইনে
করে নিবেন ।
মালয়েশিয়া কেমন দেশ
মালয়েশিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। যেখানে আধুনিক অট্টালিকার পাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সবুজ পাহাড়। রয়েছে সাগরের গর্জন। যেখানে নানান জাতির সংস্কৃতি মিলেমিশে তৈরি করে এক অসাধারণ রংধনু। দেশটি মূলত দুটি ভাগে বিভক্ত।
- পশ্চিম মালেশিয়া এবং
- বর্ণিয়-মালয়েশিয়া বা পূর্ব মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি
- কনস্ট্রাকশন
- ম্যানুফ্যাকচারিং
- হোটেল ও রেস্টুরেন্ট
- কৃষি
- ক্লিনিং সার্ভিস
- সিকিউরিটি গার্ড
- গৃহকর্ম
- ফ্যাক্টরি বা কারখানা ওয়ার্কার
- ওয়েল্ডার
- টেইলার ইত্যাদি।
মালয়েশিয়া সর্বনিম্ন বেতন কত
মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত
- স্টুডেন্ট ভিসা
- টুরিস্ট ভিসা
- কৃষি ভিসা
- ফ্যাক্টরি ভিসা
- কোম্পানি ভিসা
- এমপ্লয়মেন্ট ভিসা
- মেডিকেল ভিসা
- বিজনেস ভিসা ইত্যাদি।
ক্রমিক নং | ভিসা ক্যাটাগরি | মোট ভিসা খরচ ( টাকা ) |
---|---|---|
১ | স্টুডেন্ট ভিসা | ২০০০০০ থেকে ৩০০০০০ টাকা |
২ | ট্যুরিস্ট ভিসা | ১০০০০০ থেকে ২৫০০০০ টাকা |
৩ | ওয়ার্ক পারমিট ভিসা | ২০০০০০ থেকে ৫০০০০০ টাকা |
৪ | বিজনেস ভিসা | ৪০০০০০ থেকে ৫০০০০০ টাকা |
৫ | মেডিকেল ভিসা | ১০০০০০ থেকে ২০০০০০ টাক |
মালয়েশিয়া ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
- অনলাইন আবেদনঃ প্রথমে মালয়েশিয়া ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন অফিসে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা কনস্যুলেটের মাধ্যমে আপনাকে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে। এখানে আপনার প্রয়োজন হবে পাসপোর্ট, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, ভিসা ফি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট।
-
ডকুমেন্ট প্রস্তুতিঃ আপনার পাসপোর্টটি হতে হবে কমপক্ষে ছয় মাসের
মেয়াদে। ভিসা আবেদন ফরম পূরণ করে পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং আবেদন ফি তাদের
ভিসার ধরন অনুযায়ী আপনাকে প্রদান করতে হবে।
-
ভিসা ইন্টারভিউঃ যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আপনাকে কনসুলটে ইন্টারভিউয়ের
জন্য যেতে হতে পারে।
-
ভিসা অনুমোদনঃ আপনার ভিসা আবেদন যখন অনুমোদন হয়ে যাবে। তখন আপনি আপনার ভিসা
সংগ্রহ করতে পারবেন।
বাংলাদেশিরা কেন কাজের জন্য মালয়েশিয়া যানঃ
- এর কারণ হলো উচ্চ বেতনের সুযোগ।
- কম খরচে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ।
- কাজের সুযোগের সহজলভ্যতা।
- তুলনামূলক সাশ্রয়ী জীবনযাত্রা।
- হালাল খাবার ও মুসলিম বান্ধব পরিবেশ।
- ভৌগোলিক নৈকট্য ও সংস্কৃতিতে কিছুটা মিল।
- যারা পূর্বে গিয়েছে তারা ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে।
আপনার মূল্যবান মতামত দেন। এখানে প্রতিটি মতামতের রিভিউ প্রদান করা হয়।
comment url